পৃথিবী জুড়ে সর্বোচ্চ উচ্চতাসম্পন্ন ১০ ভাস্কর্য
নিউজ ডেস্ক
ফাইল ছবি
ভাস্কর্যের মধ্য দিয়ে মানব সভ্যতার ক্রমবিকাশের ধারা খুঁজে পাওয়া যায়। একই সঙ্গে মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, ধর্মীয় দর্শন বা কথকথা, রাজনৈতিক বা রাষ্ট্রীয় ক্রমবিবর্তনের ধারাকে অনুধাবন করা যায়।
পৃথিবী জুড়ে ভিন্ন আকৃতির অবাক করা বড় বড় ভাস্কর্য দন্ডায়মান! এসব ভাস্কর্য বা মানবমূর্তিগুলোর কোনোটা বানানো হয়েছে কোনো বিখ্যাত ব্যক্তির স্মৃতিতে, কোনোটি ধর্মীয় স্মৃতিবাহক আবার কোনোটি ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী বহন করছে।
এসব ভাস্কর্য পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে। এমনকি ভাস্কর্যের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন স্থানের নামও পরিবর্তন হয়েছে। যেমন বিখ্যাত স্ট্যাচু অব লিবার্টি ভাস্কর্যটি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থিত, এটি নিউইয়র্কের পরিচয়ও বহন করে।এমনই দশটি সবচেয়ে বড় মানবমূর্তি তথা ভাস্কর্যের কথা জেনে নিন-
গ্র্যান্ড বুদ্ধ, লিংস্যান
চীনের লংসান পাহাড়ে অবস্থিত এই বিশাল ভাস্কর্যটির উচ্চতা ৮৮ মিটার। এই ভাস্কর্যটি পুরোটাই ব্রোঞ্জ দ্বারা নির্মিত। ভাস্কর্যটির ওজন প্রায় ৭০০ টন। প্রায় ৭৪ একর অঞ্চল জুড়ে থাকা এই পুরো ভাস্কর্যটি জুড়ে রয়েছে অনেকগুলো সিড়ি।
গ্রেট বুদ্ধ অব থাইল্যান্ড
থাইল্যান্ডের সবচেয়ে উচু ভাস্কর্য এটি। এর উচ্চতা ৯২ মিটার। ১৯৯০ সালে এটির নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিলো। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে এর কাজ শেষে ২০০৮ সালে এটি উন্মুক্ত হয়। এটি সিমেন্টের তৈরি এবং বাইরে সোনালী রঙ করা।এতোটা সুক্ষ্ণভাবে রঙ করা যে অনেকেই এটিকে ধাতুর মুর্তিও ভেবে বসতে পারেন!
পিটার দ্য গ্রেট স্ট্যাচু
এই ভাস্কর্যটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দেশ অর্থাৎ রাশিয়ায় অবস্থিত। মস্কোতে অবস্থিত এই ভাস্কর্যটি ৪৩ বছর রাশিয়া শাসন করা সম্রাট পিটারের সম্মানার্থে নির্মিত। এটি ১৯৯৭ সালে নির্মাণ করা হয়। এর উচ্চতা ৯৮ মিটার। এটি মস্কো শহরের মস্কোভা নদীর দিকে মুখ করা অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। ১ হাজার টন ওজনের ভাস্কর্যটির প্রায় ৬০০ টনই স্টিলের। এই ভাস্কর্যটিতে সম্রাট পিটার একটি পানিওয়ালা জাহাজে দাঁড়িয়ে আছেন। রাশিয়ান নেভীর পথচলা পিটার দ্য গ্রেটের মাধ্যমেই শুরু হয়েছিলো।
সেনদাই দাইকানুন
বিশাল এই ভাস্কর্যটি জাপানের সেনদাই-য়ে দাঁড়িয়ে আছে। এই মানবমূর্তির উচ্চতা ১০০ মিটার।ভাস্কর্যটি ১৯৯১ সালে নির্মাণের সময়ই পৃথিবীর সেই সময়ের সবচেয়ে লম্বা ভাস্কর্য ছিলো। এই ভাস্কর্যের উপর থেকে পুরো শহর দেখা যাবে৷ভাস্কর্যটির চূড়ায় লিফটের সাহায্যে উঠা যায়৷
এম্পেরর ইয়ান এন্ড হুয়ান
চীনের দু’জন শাসনকর্তার স্মৃতিতে এই ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়। ১৯৮৭ সালে শুরু হয়ে বিশ বছর শেষে ২০০৭ সালে নির্মিত হয় ভাস্কর্যটি। ভাস্কর্যটি ১০৬ মিটার উচু। এটি চীনের হেনান প্রদেশে অবস্থিত। চীনের সরকার এটি নির্মাণের জন্য ২২ দশমিক ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করেছিলো।
গুয়ান ইন অব সাউথ সী অব সানইয়া
এই ভাস্কর্যটি বৌদ্ধ ধর্মের একজন দেবীর ভাস্কর্য। এটি চীনের হেনান প্রদেশে অবস্থিত। এই ভাস্কর্যটির তিনটি চেহারা। ১০৮ মিটার উচ্চতাসম্পন্ন ভাস্কর্যটি বানাতে ছয় বছর সময় লেগেছিলো।প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক এই ভাস্কর্য দেখার জন্য ভীড় জমান। বিশেষ করে এর তিনটি চেহারা সকলকেকে বিমোহিত করে।
উসিকু ডাইবুতসু
উসিকু ডাইবুতসু হচ্ছেন উসিকুতে মহান বুদ্ধ। এই মানবমূর্তিটি জাপানের উসিকু শহরে অবস্থিত। এর উচ্চতা ১১০ মিটার।এই ভাস্কর্যটি ব্রোঞ্জ দিয়ে নির্মিত। আপনি চাইলে এই মানবমূর্তিটির চূড়ায় উঠতে পারবেন। সেজন্য লিফটের ব্যবস্থা রয়েছে। এতে চারটি ফ্লোর আছে। প্রথম ফ্লোরে আপনি গান শুনতে পারবেন। পরেরটায় অর্থাৎ দ্বিতীয় ফ্লোরে আপনি বিভিন্ন ধার্মিক বই পড়তে পারবেন। ৩য় ফ্লোরে বুদ্ধেরই আরো ৩০ হাজার মূর্তি রাখা আছে।আর সবচেয়ে উপরের ফ্লোর থেকে চারদিকের সুন্দর পরিবেশ উপভোগ করা যাবে।
লাইকিউন সেতকেয়ার
মিয়ানমারের মনিয়াতে অবস্থিত এই মূর্তিটির উচ্চতা ১১৬ মিটার। এর কাজ শুরু হয় ১৯৯৬ সালে ও নির্মাণ শেষ হয় ২০০৮ সালে। এটি ১৩ দশমিক ৫ মিটারের একটি সিংহাসনের উপর দাঁড়িয়ে। এই মূর্তিটি অনেক জনপ্রিয় এবং পর্যটকদের প্রিয়। এই মূর্তিটির ভেতরেও লিফট থাকার দরুণ উপরে উঠা যায়। ফলে এটির পাশেই ৮৯ মিটারের শুয়ে থাকা বুদ্ধের মূর্তিও দেখা যায় এখান থেকে।
স্প্রিং টেম্পল বুদ্ধ
একসময়ের সবচেয়ে বড় ভাস্কর্য ছিলো এটি। চীনের হেনানে অবস্থিত ভাস্কর্যটি অনেক জনপ্রিয়। এর উচ্চতা ১৫৩ মিটার। সারা দুনিয়া থেকে এই ভাস্কর্যটি দেখতে লাখো মানুষ ভীড় জমায় চীনের হেনানে। সেখানকার অন্যান্য সব বড় বড় মানব মূর্তি থাকলেও তাদের চেয়ে এটির জনপ্রিয়তা বেশি। র একটিই কারণ যে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা ভাস্কর্য ছিলো এককালে। মাত্র কয়েক মাস আগে ভাস্কর্যটি নিজের এই অনন্য রেকর্ডটি হারিয়ে এখন উচ্চতার দিক দিয়ে দুই নাম্বারে।
স্ট্যাচু অব ইউনিটি
ভারতে সম্প্রতি নির্মিত এই ভাস্কর্যটি এখন পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা ভাস্কর্য। এই ভাস্কর্যটি ১৮২ মিটার উঁচু। এই ভাস্কর্যটি সর্দার বল্লাব ভাই প্যাটেলের। তিনি ভারতের আইরন ম্যান বা লৌহ মানব নামে পরিচিত৷ চারটি স্ট্যাচু অব লিবার্টির চেয়েও বড়। এটি নরেন্দ্র মোদী'র পছন্দের একটি প্রজেক্ট। এই ভাস্কর্য দিয়েই সবচেয়ে লম্বা ভাস্কর্যের রেকর্ড নিজেদের করে নিয়েছে ভারত। এটি ভারতের গুজরাট প্রদেশের ভাদোদারা শহরের নিকটে অবস্থিত। সর্দার বল্লাব ভাই প্যাটেল ভারতের সহকারি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এটি নির্মাণে প্রায় ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হয়।
- বাঙালির বংশ পদবীর ইতিহাস
- গন্ধভাদালি লতার উপকারিতা
- ‘ময়ূর সিংহাসন’
- মিশরীয় সভ্যতা এবং নীল নদ
- মধ্যযুগের ইতিহাস
- ব্যবহারের আগে জানুন প্লাস্টিক বোতলে চিহ্নের মানে কী
- পবিত্র কাবা শরীফের অজানা যত তথ্য
- হ্যালুসিনেশন আসলে কী, রোগ না অন্য কিছু?
- পিরামিডের অজানা তথ্য…
- বিকাশ নগদ এবং রকেট’র ভুল নম্বরে টাকা চলে গেলে ফেরত পাবেন যেভাবে
- চুম্বকের আদ্যোপান্ত...
- ‘চুম্বন’ আদর ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ
- ‘রক্ত’ রঙের রহস্য...
- ‘ধানমন্ডি’ নামকরণের ইতিহাস
- মানুষের পর বুদ্ধিমান প্রাণী...